• জাতীয়

    নিজের অধিকার আদায়ে মহাসমাবেশে যোগ দিন-মির্জা ফখরুল

      নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ২৮ অক্টোবর ২০২৩ , ৭:০৫:১০ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিজের অধিকার আদায়ের জন্য বিএনপি ঘোষিত মহাসমাবেশে দেশের সাধারণ মানুষকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমাদের উদাত্ত আহ্বান, সারাদেশে মানুষের প্রতি, আপনাদের নিজস্ব ভোটের অধিকার আদায় করার জন্য, আপনাদের যে ন্যূনতম অধিকার আছে সেই অধিকারগুলো যাতে পালন করতে পারেন সেই ধরনের একটা রাষ্ট্র আমরা চাই। সেই রাষ্ট্রের জন্যে বিএনপির পক্ষ থেকে আমাদের আহ্বান আপনারা আসুন ২৮ অক্টোবর শনিবার আমাদের এই মহাসমাবেশে যোগ দিয়ে সরকারকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিন যে, আর নয়। যথেষ্ট হয়েছে এদেশের মানুষের ওপরে অত্যাচার-নির্যাতন করেছ। গতকাল শুক্রবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

    মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা জানেন, অর্থনীতিকে তারা ধবংস করে দিয়েছে, লুটপাট করেছে প্রতিটি ক্ষেত্রে। এখন গোটা রাষ্ট্রকে তারা পুরোপুরিভাবে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে মিথ্যা মামলার অজুহাতে নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের নামে মামলা হয়েছে ৪১৮টি, গ্রেফতার হয়েছে ৪ হাজার ২০ জন।
    বিএনপির মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণ হবে জানিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, আমরা নয়া পল্টনে সমাবেশ করতে চাই। আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে এই মহাসমাবেশ করব। আমাদের মহাসমাবেশে উদ্দেশ্যই হচ্ছে যে, সরকারকে এটার (পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা) চাপ দেওয়া এবং বাধ্য করার চেষ্টা করা। সরকার যেন তার সম্বিত ফিরে পায়, শুভবুদ্ধির উদয় হয় এবং তারা একদফা দাবি মেনে নিয়ে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটা নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে, নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ নেই।

    প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা আশা করব, তারা কোনো বাধা সৃষ্টি করবেন না। শনিবার এর মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে সব রকমের বাধা-বিপত্তিকে দূর করতে তারা সহযোগিতা করবেন।
    সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি। সরকার এবং ক্ষমতাসীন দল তারা যদি কোনো রকমের বাড়াবাড়ি করে, অত্যাচার নির্যাতন করে তার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। আপনারা বলেছেন, সরকারি দল লাঠির কথা বলেছে। এগুলো প্রভোগেশনস, উসকানিমূলক। আসলে পুরো ব্যাপারটাই একটা প্রভোগেশন চলছে। তাদের সরকার প্রধান একরকম বলছে, অন্যদিকে তারা (প্রশাসন) পুরো জনগণকে জিম্মি করে ফেলতে চাইছে তাদের দমননীতি দিয়ে।

    একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা চলছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমগ্র জাতি যেখানে চাচ্ছে, যে এই সরকারকে বিদায় করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। মূল বিষয়টা হচ্ছে যে, একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করা। তা না হলে এখানে কখনোই নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না।
    তিনি বলেন, আজকে দেশে মানুষ যখন তার ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে না, তখন কি করে আবার একটা নির্বাচন হতে পারে এটা কারোই কাছে বোধগম্য না। উদ্দেশ্য একটাই, যেমন করে ’১৪ এর মত, ১৮ এর মত একটা নির্বাচন করে তারা জোর করে ক্ষমতায় চলে আসবে। এদেশের জনগণ সেটা মেনে নেবে না। নেবে না বলেই এই আন্দোলন শুরু হয়েছে। এই আন্দোলনে ইতোমধ্যে আমাদের অন্তত ২২ নেতা-কর্মী প্রাণ হারিয়েছে, প্রতিদিন সরকারের দমন-নির্যাতন বেড়েই চলেছে।

    নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন এদেশের মানুষ মেনে নেবে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের সত্যিকার অর্থে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছা নেই, একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছা নেই, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছা নেই। সেই কারণে তারা একতরফাভাবে এই নির্বাচনকে করে নেওয়ার জন্য সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব করেছে। কিন্তু এবার জনগণ অধিকার আদায়ের জন্য জেগে উঠেছে। প্রত্যেকটি কর্মসূচি জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সফলভাবে পালিত হচ্ছে।

    সবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়,আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মীর নাসির, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী উপস্থিত ছিলেন।

    আরও খবর

    Sponsered content