• আন্তর্জাতিক

    ইতিহাস গড়ে ইংল্যান্ডকে হারাল আফগানিস্তান

      ডেস্ক রিপোর্টঃ ১৫ অক্টোবর ২০২৩ , ১০:৪৪:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

    চলতি বিশ্বকাপে একের পর এক নতুন ইতিহাস তৈরি হচ্ছে। কখনও বিশ্বকাপের ইুতহাসে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড, কখনও বা সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। এবার বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে রানে ৬৯ হারিয়ে ইতিহাস তৈরি করলো আফগানিস্তান। এই জয়ের ফলে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিলো আফগানরা।

    আফগানিস্তানের দেওয়া ২৮৫ রানের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আফগান বোলারদের বোলিং তোপে দিশেহারা ছিল ইংলিশ ব্যাটাররা। যার ফলে মাত্র ৯১ রানেই তিন উইকেট হারায় ইংলিশরা। ৯১ রানে ৩ উইকেট যাওযার পর আজকের ম্যাচে সর্বোচ্চ রান করা হ্যারি ব্রুক দলের হাল ধরতে চেষ্টা করেন। কিন্তু যোগ্য সঙ্গির অভাবে তিনি দলের বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারেননি। একপ্রান্ত আগলে রাখা হ্যারি ব্রুকসের বিদায়ের পর ইংল্যান্ডের ইনিংস আর বেশিদূর এগোতে পারেনি। যার ফলে ৪০ ওভার তিন বলে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ২১৫ রান করে ইংলিশরা। আর আফগানরা ইতিহাস তৈরি করে ইংল্রান্ডের বিপক্ষে ৬৯ রানের জয় তুলে নেয়।

    ইংল্যান্ডের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালান। খেলার মাত্র এক ওভার এক বলেই ফজলহক ফারুকির বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফিরে যান জনি বেয়ারস্টো। ৪ বলে ২ রান করেছেন তিনি। জনি বেয়ারস্টোর বিদায়ে মাত্র তিন রানেই ভাঙে ইংলিশদের ওপেনিং জুটি।

    জনি বেয়ারস্টোর বিদায়ের পর জো রুটকে নিয়ে জুটি গড়েন ডেভিড মালান। কিন্তু দলীয় ৩৩ রানে মুজিব-উর-রহমানের বলে জো রুট প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলে ৩০ রানেই ভাঙে এই জুটি। ১৭ বলে ১১ রান করেন তিনি।

    জো রুটের বিদায়ের পর হ্যারি ব্রুকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ডেভিড মালান। মেহাম্মদ নবীর বলে ডেভিড মালান সাজঘরে ফিরে গেলে ভেঙে যায় এই জুটি। ডেভিড মালান ৩৯ বলে ৩২ রানে ফিরে যান।

    ডেভিড মালানের বিদায়ের পর জস বাটলারের সঙ্গে জুটি বাধেঁন হ্যারি ব্রুক। কিন্তু এই জুটিও বেশিদূর যেতে পারেনি। দলীয় ৯১ রানে জস বাটলারের বিদায়ে ২৩ রানে ভেঙে যায় এই জুটি। ১৮ বলে ৯ রান করে ফিরে যান তিনি।

    জস বাটলারের বিদায়ের পর লিয়াম লিভিংস্টোনের সঙ্গে জুটি বাঁধার চেষ্টা করেন হ্যারি ব্রুক। কিন্তু এই জুটিও বেশি সময় টিকলো না। ১৪ বলে ১০ রান করে রশিদ খানের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফিরে গেলেন লিয়াম লিভিংস্টোন। যার ফলে মাত্র ১১৭ রানেই ৫ উইকেট হারায় ইংলিশরা।

    ১১৭ রানে ৫ উইকেট যাওয়ার পর স্যাম কারানের সঙ্গে ২১ রানের জুটি গড়েন হ্যারি ব্রুক। স্যাম কারান ২৩ বলে ১০ রান করে মোহাম্মদ নবীর দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে যান স্যাম কারান।

    স্যাম ক্যারির পর ফিরে যান ক্রিস ওকসও। মুজিবের শিকার হয়ে ২৬ বলে ৯ রান করে ফিরে যান তিনি।একপ্রান্ত আগলে রাখা হ্যারি ব্রুকও এরপর নিজের ইনিংসকে আর বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি। ৪৫ বলে ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া ব্রুক ৬১ বলে ৬৬ রানে ফিরে যার। তার বিদায়ে ১৬৯ রানেই ৮ উইকেট হারায় ইংলিশরা।

    ব্রুকসের বিদায়ের পর ইংলিশদের ইনিংস আর বেশিদূর এগোতে পারেনি। শেষের দিকে আদিল রশিদের ২০ রান,

    মার্ক উডের ১৮ রান আর রিচ টপলির অপরিজত ১৫ রান শুধু হারের ব্যবধান কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ৪০ ওভার তিন বল খেলে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ২১৫ রান করতে সক্ষম হয় ইংল্যান্ড। যার ফলে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৯ রানের জয় পেল আফগানরা।

    এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আজ ইংলিশ বোলারদের ওপর তান্ডব চালান দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। এই জুটিতে ভর করে মাত্র ১২ ওভারেই দলীয় শতক পার করে আফগানিস্তান।

    ক্রিস ওকস, রিচ টপলি ও স্যাম কারান, আদিল রশিদ ও মার্ক উড হাজার চেষ্টা করেও ভাঙতে পারছিলেন না এই জুটি। এরই মাঝে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। মাত্র ৩৩ বলে ৫০ রান করেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে সাতটি চারের মার ও ২টি ছয়ের মার।

    অবশেষে দলীয় ১১৪ রানে এই জুটি ভাঙেন আদিল রশিদ। ৪৮ বলে ২৮ রান করা ইব্রাহিম জাদরানকে ফেরালেন তিনি। জাদরানের বিদায়ে ১১৪ রানে ভাঙে আফগানিস্তানের ওপেনিং জুটি।

    ইব্রাহিম জাদরানের বিদায়ের পর দলীয় ১২২ রানে আদিল রশিদের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে যান রহমত শাহ। ৮ বলে ৩ রান করে ফিরে যান তিনি।

    রহমত ফেরার পরের বলেই ফিরেছেন গুরবাজও। রান আউটের শিকার হয়ে ৫৭ বলে ৮০ রান করে ফিরে যান তিনি। সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে তা পূরণ করতে পারলেন না তিনি।

    গুরবাজের বিদায়ের পর লিয়াম লিভিংস্টোনের শিকার হয়ে ফিরে যান আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ২৪ বলে ১৯ রান করে ফিরে গেলেন তিনি। তার বিদায়ে ১৫২ রানেই ৪ উইকেট হারায় আফগানরা। ওমরজাইয়ের বিদায়ের পর ফিরে যান হাশমতউল্লাহ শহিদীও। ৩৬ বলে ১৪ রান করে জো রুটের শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি।

    হাশমতউল্লাহ শহিদীর পর বেশি সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি অভিজ্ঞ খেলোয়াড় মোহাম্মদ নবী। ১৫ বলে মাত্র ৯ রান করে মার্ক উডের শিকার হয়ে তিনিও ফিরে যান। ১৯০ রানে ৬ উইকেট হারায় আফগানরা।

    এরপর সপ্তম উইকেট জুটিতে রশিদ খানের সঙ্গে ৪৩ রানের জুটি গড়েন ইকরাম আলিখিল। এই ৪৩ রানের জুটিতেই ঘুরে দাঁড়ায় আফগানিস্তান।

    কিন্তু দলীয় ২৩৩ রানে আদিল রশিদের শিকার করে রশিদ খান প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলে ভেঙে যায় এই জুটি। ২২ বলে ২৩ রান করে ফিরে যান তিনি।

    রশিদ খানের বিদায়ের পর মুজিব-উর-রহমানকে নিয়ে জুটি বাঁধেন ইকরাম আলিখিল। এর মাঝেই তিনি তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। ৬১ বলে ৫০ রান করেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে তিনটি চারের মার ও একটি ছয়ের মার।

    হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিলেও নিজের ইনিংস বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। রিচ টপলির শিকার হয়ে ৬৬ বলে ৫৮ রান করে ফিরে যান তিনি। এই জুটি থেকে আসে ৪৪ রান।

    তিার বিদায়ের পর মুজিব-উর-রহমানও পিরে যান প্যাভিলিয়নে। ১৬ বলে ২৮ রান করে ফিরে যার তিনি। এরপর ৪৯ ওভার ৫ বলে সব উইকেট হারিয়ে ২৮৪ রান তুলে আফগানিস্তান।

    ইংল্যান্ডের হয়ে আদিল রশিদ তিনটি, মার্ক উড দুইটি, জো রুট, লিয়াম লিভিংস্টোন ও রিচ টপলি একটি করে উইকেট নেন।

    আরও খবর

    Sponsered content