• সারাদেশ

    দেড় মাস পর দেশে এলো সুনামগঞ্জের সেই আকবরের মরদেহ

      মিতালী রানী দাস ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ , ১০:৫৯:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    দালালের খপ্পরে পড়ে প্রাণ হারানো সুনামগঞ্জের সেই আকবরের মরদেহ দেশে এলো দেড় মাস পর। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় সুনামগঞ্জে তার নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায় তার মরদেহ। আকবর বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের সিরাজপুর পূর্ব পাড়া পেটনি গ্রামের আব্দুল মোতালিবের ছেলে।

    জানা যায়, পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে কিস্তি ও জমি বিক্রির টাকায় উপজেলার সিরাজপুর গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে সৌদিপ্রবাসী শহিদ মিয়ার মাধ্যমে গত মার্চ মাসে সৌদি আরবে পাড়ি জমান পেটনি গ্রামের আকবর হোসেন। এ যাত্রায় আকবরের সঙ্গে সে দেশে যান একই গ্রামের আরও ৪ জন। কোম্পানির ভিসায় ৪ লক্ষ টাকার চুক্তিতে সৌদি গিয়ে ৩ মাস পর সেখানে অবৈধ হয়ে যান তারা। সৌদি প্রবাসী দালাল শহিদ তাদের আকামা লাগিয়ে কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে সবাইকে নিয়ে যায় মরুভূমিতে। কাজ পেতে টাকা লাগবে বলে দেশে তাদের পরিবারের কাছ থেকে আরও অতিরিক্ত টাকা নেয় শহিদের বাবা মো. জালাল উদ্দিন।

    অতিরিক্ত টাকা নিয়েও আকবর সহ ওই যুবকদের মরুভূমির একটি ঘরে বন্দি করে রাখেন রাখেন শহিদ। কাজের অভাবে দুর্গম মরুভূমিতে দীর্ঘদিন অনাহার ও বিনা চিকিৎসায় ৪ জনের মধ্যে মো. আকবরের মৃত্যু হয় গত ৫ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ১টার দিকে। পরে নিহত আকবরের সঙ্গে বদ্ধঘরে আটকে থাকা একই গ্রামের অপর তিন যুবক মৃত্যুর সংবাদটি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার পরিবারকে অবগত করে এবং তাদেরকে বদ্ধঘর থেকে জীবিত উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানায়।

    এ ঘটনায় নিহত আকবরের বড় ভাই আব্দুস ছালাম বাদি হয়ে দালাল জালাল উদ্দীন তার স্ত্রী রাজিয়া খাতুন ও ছেলে শহিদ মিয়াসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে বিশ্বম্ভরপুর থানায় একটি মামলা করেন। এরপর থেকেই গা-ঢাকা দিয়েছেন দালাল জালাল উদ্দীন।

    আকবরের বড় ভাই আব্দুস সালাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার একটি বিমানে আকবরের মরদেহ দেশে আসে। সেখান থেকে মরদেহ গ্রহণ করে সকালে সুনামগঞ্জে নিয়ে আসি। বাদ আসর জানাজা শেষে নিজ গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

    বিশ্বম্ভপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন জানান, সকালে সুনামগঞ্জে মরদেহ এসে পৌঁছালে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়। সৌদিতে মরদেহের ময়নাতদন্ত না হওয়ায় সুনামগঞ্জে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

    আরও খবর

    Sponsered content