বাংলাদেশের অন্যতম সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেন সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী। একসময়কার আওয়ামী লীগ নেতা দলটি থেকে বেরিয়ে গড়ে তোলেন গণফোরাম। দলটির সভাপতির পদও ছিল তার।

১৯৯২ সালে গড়ে তোলা সেই দলটির সভাপতির পদ থেকে নিলেন অব্যাহতি। একইসঙ্গে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণাও দিয়েছেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত দলের বিশেষ জাতীয় কাউন্সিলে এ ঘোষণা দেন ড. কামাল হোসেন।

তবে পদ ও রাজনীতি ছাড়লেও ড. কামাল হোসেন গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি হিসেবে আজীবন দায়িত্বে থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত হয় কাউন্সিলে।

একই সঙ্গে কাউন্সিলে গণফোরামের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মফিজুল ইসলাম খান কামাল ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ড. মো. মিজানুর রহমান। এক সপ্তাহের মধ্যে গণফোরামের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে বিশেষ জাতীয় কাউন্সিলে জানানো হয়।

বিশেষ জাতীয় কাউন্সিলে লিখিত বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আপনাদের নিয়ে পথ চলেছি, জাতীয় সমস্যা ও সংকট নিরসনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার বয়স এবং শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় এখন আর সক্রিয়ভাবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় আমি সমস্ত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে তথা গণফোরামের সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি। তবে আমি আমার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে দেশ ও জাতির জন্য সাধ্য মোতাবেক অবদান রাখতে চেষ্টা করব।’

‘দলের প্রতিও আমার আন্তরিকতা, দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আমার আবেগ-অনুভূতি, সহানুভূতি-সহযোগিতা ও পরামর্শ সব সময়ই থাকবে বলেও লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন ড. কামাল হোসেন।

গণফোরামের কাউন্সিলরদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা দলকে শক্তিশালী ও সুসংগঠিত করতে আজ নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করবেন। আজকের এই কাউন্সিলে আপনারা গণতান্ত্রিকভাবে যে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করতে যাচ্ছেন, আমি আশা করব এই কমিটি আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন। দেশের গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনারা সর্বদা সচেষ্ট থাকবেন। জয় হোক গণফোরামের, জয় হোক জনতার।’