সব প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক নবী মুহাম্মদুর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর। আমরা আল্লাহর সৃষ্ট জীব। আল্লাহ জীব সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁর ইবাদত করার জন্য এবং তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করাসহ আদেশ-নির্দেশ মানার জন্য।
আল্লাহ বলেন, মানুষ কি মনে করে তাদের অনর্থক সৃষ্টি করা হয়েছে? অর্থাৎ স্বাধীন করে, কোনো আদেশ-নির্দেশ করা হয়নি, কস্মিনকালেও নয়। আল্লাহ আরও বলেন, তোমরা কি মনে কর আমি তোমাদের অনর্থক সৃষ্টি করেছি। আর তোমাদের আমার কাছে ফিরে আসতে হবে না? (সুরা মুমিনুন-১১৫)।
আল্লাহ আরও বলেন, হে ইমানদারগণ, তোমরা তোমাদের সেই রবকে ভয় কর যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরও সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো। তিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা তাঁকে ভয় করো এবং তাঁরই ইবাদত করো। (সুরা বাকারা-২১)।
তিনি আরও বলেন, আমি মানুষ ও জিন সৃষ্টি করেছি যাতে তারা আমার ইবাদত করে। (সুরা জারিয়াত-৫৬)। আল্লাহ বলেন, আমি তোমার আগে যে রসুল প্রেরণ করেছি তাদের কাছে ওহি করেছি আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য মাবুদ নেই। অতএব তোমরা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করো। (সুরা আম্বিয়া, আয়াত-২৫)।
অতএব নারী-পুরুষ, জিন, আরব-অনারব, ধনী-গরিব সবার ওপর ফরজ হচ্ছে তারা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করবে। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা ও তাঁর শরিয়তের অনুসরণ করবে। তাগুতকে পরিহার করবে। তাদের ওপর ওয়াজিব হচ্ছে এ ইবাদতের ব্যাপারে ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করা ও তা ভালোভাবে জানা। এজন্য একমাত্র পথ হচ্ছে আল্লাহর কিতাব ও সুন্নাহর ব্যাপারে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে তা অনুসরণ করা।
তাহলেই ইবাদত এবং সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানা যাবে। তাহলেই আমরা জানতে পারব আমাদের আদেশ দেওয়া হয়েছে তাওহিদের ঘোষণা দেওয়ার জন্য যা হচ্ছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ। এ ঘোষণা দেওয়া তাওহিদের মূলভিত্তি। এ সাক্ষ্য দেওয়া সবচেয়ে মহান বিষয় এবং ইবাদতের মূলভিত্তি।
তাওহিদ হচ্ছে, আমি ও আমরা একমাত্র রবের ইবাদত করব এবং নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস রাখব তিনিই একমাত্র হক মাবুদ, অন্য কেউ নয়। যেমন আল্লাহতায়ালা বলেন, আল্লাহই হচ্ছেন হক, তিনি ছাড়া যারা অন্যদের আহ্বান করে তা বাতিল। তিনি আরও বলেছেন, তোমরা একমাত্র আমারই (আল্লাহরই) ইবাদত করবে। তিনি আরও আদেশ দিয়েছেন, তারা একনিষ্ঠভাবে দীনকে খালিস করে আল্লাহর ইবাদত করবে, সালাত কায়েম করবে এবং জাকাত প্রদান করবে, এটাই সঠিক দীন। (সুরা বাইয়্যিনাহ-৫)।
কোরআনুল করিমের সবচেয়ে মহান সুরা ফাতিহা যা সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ সুরা হিসেবে নাজিলকৃত এবং প্রতি সালাতের প্রতি রাকাতেই পাঠ করা ফরজ করে দিয়েছেন। ওই সুরায় সব প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর যিনি জগৎগুলোর প্রতিপালক, দয়াময় ও অতি দয়ালু এবং বিচার দিবসের মালিক স্বীকারোক্তি দিয়ে এরপর তাঁর বান্দাদের শিখিয়ে দিয়েছেন, আমরা যেন এভাবে পাঠ করি, আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি। একমাত্র তোমার কাছেই সাহায্য চাই। অতএব ইবাদত একমাত্র তাঁর অধিকার অন্য কারও নয়।
তাই যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে ফেরেশতাদের, নবীদের, কবরবাসীদের, মূর্তির, গাছের, পাথরের ও জিনের ইবাদত করে; তাদের কাছে সাহায্য চায়; তাদের জন্য নজর-নেওয়াজ মানে বা যে কোনো ইবাদত করে তবে সে আল্লাহকে অস্বীকারকারী। এ ধরনের ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু সাক্ষ্য দেওয়া বিনষ্টকারী। যে উদ্দেশ্যে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সে তার বিরোধী।
তাই আমাদের সবার ওপর ফরজ/ওয়াজিব একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা, একমাত্র তাঁরই কাছে চাওয়া, একমাত্র তাঁর কাছে প্রত্যাশা করা, একমাত্র তাঁকে ভয় করা। একমাত্র তাঁর জন্য হবে সালাত, সিয়াম, জবেহ, নজর-নেওয়াজ, হজ ও অন্যান্য ইবাদত। ইবাদত একমাত্র আল্লাহর হক। আল্লাহ আমাদের সবার ওপর অনুগ্রহ দান করুন যাতে তাঁর দীনের ফিকহ অর্জন করে দীনের ওপর অটল থাকতে পারি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এস কে আলিম,নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ আবুল বাসার,বার্তা সম্পাদকঃ ইসলাম ,মফস্বল সম্পাদক ডাঃ শফিকুর ইসলাম - ,ajkerkhobor02@gmail.com প্রকাশক কর্তৃক ৭৮/ই, পুরানা পল্টন লেন, বিজয়নগর, ঢাকা-১০০০ এবং আর এস প্রিন্টিং প্রেস ৯২ আরামবাগ (ক্লাব মার্কেট) মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।
Copyright © 2024 আজকের খবর | | Ajker Khobor. All rights reserved.